০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন মঙ্গলবার, ২০-মে ২০২৫

জুলাই-আগস্ট মানুষ ভুলতে বসেছে, জালিমদের স্মৃতিস্তম্ভ করার তাগিদ সলিমুল্লাহ খানের 

প্রকাশ : ১৯ মে, ২০২৫ ১১:৪৫ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ, চট্টগ্রাম: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের যে পতন হয়েছে, সেই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের কথা মানুষ বছর না পেরোতেই ভুলতে বসেছে। আর তাই এই আন্দোলনকারীদেরকে যারা হত্যা-নির্যাতন করেছে সেসব জালিমদের জাতির কাছে স্মরণীয় করে রাখতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। 

সোমবার চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে প্রশ্নের জবাবে সলিমুল্লাহ খান এসব বলেন। ‘সংকটের তিন চেহারা: রাষ্ট্র, জাতি ও জনগণ’ শীর্ষক এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন কলেজের উপাধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহমেদ। আলোচনায় অংশ নেন কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, বর্তমানে যে নতুন স্বৈরাচারের সম্ভাবনা আছে, সেটি আমাদের ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে। একটি স্বৈরাচারের পতনের পর সাধারণত যে নির্যাতিত হয়েছিল, সে অপরকে নির্যাতন করে। এটি হলো প্রকৃতির নিয়ম। সেটি যেন না হয়, তার রক্ষার পথ জানতে হবে।

সলিমুল্লাহ খান বলেন, জুলাই-আগস্টে আমাদের ছেলেমেয়েরা যা করেছে, বছর না পেরোতেই মানুষ ভুলতে শুরু করেছে। নিহতদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে। অথচ জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে জুলাই-আগস্টের ওই সময়ে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহতের কথা বলা হয়েছে।

বর্তমান কোনো সভ্য জাতির ইতিহাসে এমন রেকর্ড নেই জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ১৯১৯ সালে পাঞ্জাবে জেনারেল ডায়ার নামে এক ব্যক্তি গুলি করে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ জনকে হত্যা করেন। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর যুগবাণী বইয়ে লিখেছেন, নিহতের জন্য অবশ্যই স্মৃতিস্তম্ভ করা প্রয়োজন। তবে ডায়ারের নামেও একটি স্মৃতিস্তম্ভ করা দরকার, যেন তাকে দেখে মানুষ মনে করতে পারে একজন কতটা জালিম হতে পারে। নজরুলের পুনরাবৃত্তি করে আমি সবিনয়ে অনুরোধ করতে পারি, আমাদের দেশেও যে জালিমরা এত হত্যা করেছে তাদের স্মৃতিস্তম্ভ করুন, যা দিনাজপুর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মানুষ মনে রাখবে।

আদিবাসীদের প্রশ্নে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের উপজাতি বলা আমি সঠিক মনে করি না। তাদের নিয়ে চট্টগ্রামের মানুষের সবচেয়ে বেশি কথা বলা উচিত। সব বড় বড় আলোচনার আগে একটা গণভোট করা উচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠীরা কী নামে পরিচিত হতে চায়। 

অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে এক প্রশ্নে সলিমুল্লাহ খান বলেন, দৌড় শেষ হওয়ার আগে কোনো ব্যক্তির সমালোচনা করা উচিত হবে বলে মনে করি না। তবে অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে ড. ইউনূসের চেয়ে ভালো অপশন ছিল না। তিনি ব্যর্থ হলে দায় আমাদেরও।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. আবদুর রহিম। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর জসিম উদ্দীন আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানবীর মুহাম্মদ।

(শীর্ষনিউজ/ক.ম)